জায়েদ ও নয়ন সহপাঠী। জায়েদ আল্লাহ, রাসুল, ফেরেশতা, আখিরাত, তাকদির, পুনরুত্থান ইত্যাদি বিষয়কে মনে প্রাণে বিশ্বাস করে এবং মুখে স্বীকার করে। সে তার বিশ্বাস অনুসারে আমল করতে যথাসম্ভব চেষ্টা করে। অন্যদিকে নয়ন জায়েদের সাথে থাকাকালীন সালাত আদায় করে; ইমানদারসুলভ আচরণ করে। কিন্তু তার ভিন্ন ধর্মাবলম্বী বন্ধুদের সাথে থাকাকালীন তাদেরকে বলে, আমি তোদের ধর্মকেই বিশ্বাস করি। জায়েদের সাথে সালাত আদায় করি ওকে খুশি করার জন্য। তবে সে এটাও ভাবে যে, এজন্য তার কঠোর শাস্তি হতে পারে।
সুমাইয়া ও সামিয়া দুই বান্ধবী । সোনারগাঁয়ে বেড়াতে যাবে বলে দুজনেই দিন-তারিখ ঠিক করে। সুমাইয়া নির্দিষ্ট তারিখে প্রস্তুতি নিয়ে সামিয়ার অপেক্ষায় থাকে । কিন্তু সামিয়া তার বাবার কাছ থেকে টিফিন, কাগজ ও কলমের অজুহাত দিয়ে বেশ কিছু টাকা নিয়ে আদিবার সাথে মার্কেটে ঘুরতে চলে যায় । পরদিন সামিয়ার সাথে সুমাইয়ার দেখা হয়। সুমাইয়া বিষয়টি উত্থাপন করলে উভয়ের মধ্যে কথা কাটাকাটি হয় এবং উভয়ই মনঃক্ষুণ্ণ হয়।
“দুনিয়াতে মানুষের উপর অর্পিত ইসলামের বিধি বিধান যেমন- নামায, রোযা পালন করলে পরকালে এটার পুরস্কার পাওয়া যাবে”। শিক্ষকের এই বক্তব্যটি সম্পর্কে অষ্টম শ্রেণির ছাত্রী সাবিহা তার দাদুর নিকট জানতে চাইল। দাদু তাকে বুঝিয়ে বললেন, এসব দৃশ্যমান কর্মকাণ্ড অবশ্য পালনীয়। এছাড়া আল্লাহর উপর ইমান আনাসহ অদৃশ্যমান কিছু বিষয়ের উপর বিশ্বাস স্থাপনের জন্য পরকালে পুরস্কার পাওয়া যাবে। তিনি আরো বললেন এসব বিষয় আল কুরআনে সূরার মাধ্যমে আল্লাহ তায়ালা আমাদের জানিয়েছেন।
রায়হান ও আবু সালেহ দুই বন্ধু। তারা উভয়েই রমযান মাসে ইবাদত বন্দেগী করে কাটাবে বলে মনস্থির করলো। রায়হান রমযানের ২০ তারিখ হতে বাসার নিকটবর্তী মসজিদে দিনরাত অবস্থান করে ইবাদত বন্দেগী করতে লাগলো। অন্যদিকে রায়হানের মতো মসজিদে অবস্থান না করে আবু সালেহ রোযার দিনে ইবাদত বন্দেগি করতে লাগলো। প্রতি রাতে মসজিদে এশার নামাযে আবু সালেহ ইমাম সাহেবের তিলাওয়াত শোনার প্রতি তেমন মনোযোগী থাকত না।
নাঈম সাহেব পাঁচ লক্ষ টাকা ব্যয় করে একটি কৃষি খামার স্থাপন করেন। খামারে বিভিন্ন ধরনের ফসল উৎপন্ন হয়েছে। নাঈম সাহেবের খামারের ফসলের ফলন দেখে তার প্রতিবেশী শিশির সাহেব মনে কষ্ট অনুভব করলেন। ফসল কাটার পূর্বেই এক প্রলয়ঙ্করী ঘূর্ণিঝড়ে নাঈম সাহেবের খামারের অধিকাংশ ফসল বিনষ্ট হয়ে যায়। এতে শিশির সাহেব খুশি হলেন। কিন্তু নাঈম সাহেবের খামার ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় তিনি একটুও বিচলিত হননি। তিনি বললেন, এটা আল্লাহর পরীক্ষা। আমি আল্লাহর পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হতে চাই।
আকরাম সাহেব দৌলতপুর গ্রামে বসবাস করছেন। তিনি কিছুদিন ধরে লক্ষ করছেন এ এলাকায় ৬/৭ জন যুবকের একটি দল লোকজনকে নানাভাবে নাজেহাল করছে। তাদের এতই প্রভাব যে তাদেরকে কেউ কিছু বলতে সাহস পায় না। বিভিন্ন ব্যবসায় প্রতিষ্ঠান থেকে তারা অনৈতিকভাবে টাকা তুলছে। তারা এলাকার মেয়েদের স্কুল-কলেজে আসা যাওয়ার পথে কটূক্তি করে। তাদের এ পথ থেকে ফিরিয়ে আনার উপায় খুঁজে বের করার জন্য আকরাম সাহেব এলাকার মসজিদের ইমাম সাহেব ও অন্য মুরুব্বিদের সাথে আলাপ আলোচনা করতে লাগলেন।
মাহবুব সাহেব এবি কলেজের প্রভাষক ছিলেন। কলেজের কয়েকজন প্রভাষক ষড়যন্ত্র করে তাকে উক্ত কলেজ থেকে চাকরিচ্যুত করেন। তার স্ত্রী শাহিদা বেগম ছিলেন ইসলামী জ্ঞানে খুবই পারদর্শী । তিনি মাহবুব সাহেবকে সান্ত্বনা ও সাহস দেন। স্ত্রীর পরামর্শে মাহবুব সাহেব পড়ালেখা করে বিসিএস পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে সরকারি কর্মকর্তা হিসাবে নিযুক্ত হন। কয়েক বছর পর তিনি শিক্ষা অধিদপ্তরের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা হিসেবে এবি কলেজ পরিদর্শনে আসেন। তখন মাহবুব সাহেবের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রকারীরা তার কাছে ক্ষমা চাইতে আসেন। তিনি তাদেরকে বললেন আপনাদের বিরুদ্ধে আমার কোনো অভিযোগ নেই। আমি ক্ষমা করতে ভালোবাসি।
মুরাদ সাহেব ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান। তিনি এলাকায় অনেক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান প্রতিষ্ঠা করেন । তিনি গরিব মেধাবী শিক্ষার্থীদের শিক্ষাবৃত্তির ব্যবস্থা করেন। গরিব জনসাধারণের চিকিৎসার জন্য দাতব্য চিকিৎসালয় প্রতিষ্ঠা করেন। বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়নরত তার ছেলে মুবীন শীতকালীন ছুটিতে বাড়িতে এসে বাবার কার্যক্রমে খুশি হয়। একদিন সকালে ড্রয়িংরুমে বসে তিনি পত্রিকা পড়ছিলেন। হঠাৎ একই গ্রামে বসবাসরত তারিক এসে অভিযোগ করল যে, নয়নের গাভী তার ফসল নষ্ট করেছে। তখন তার বাবার অনুপস্থিতিতে উভয়ের বক্তব্য শুনে সিদ্ধান্ত দিল যে, নয়ন শস্যক্ষেত পূর্বাবস্থায় ফিরে না আনা পর্যন্ত তারিক নয়নের গাভী লালন-পালন করবে ও দুধ ভোগ করবে। উভয় পক্ষ এ সিদ্ধান্তে খুশি হলো। তার পিতাও তাকে ধন্যবাদ জানালেন।